সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তিনি জানান, এ বিষয়ে তার অবস্থান আগের মতোই রয়েছে। দেশের ভবিষ্যৎ গতি-প্রবাহ নির্ধারণের অধিকার কেবল একটি নির্বাচিত সরকারেরই থাকা উচিত।
বুধবার (২১ মে) ঢাকা সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেসে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ঢাকায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন এবং অনেকেই ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও করিডর, বন্দর, রাষ্ট্র সংস্কারসহ বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত একাধিক সেনা কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মানবিক করিডর নিয়ে মতামত
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর বিষয়েও মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানবিক করিডর বিষয়ক সিদ্ধান্ত অবশ্যই একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই আসা উচিত এবং তা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হতে হবে। জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যা কিছুই করা হোক না কেন, তা হতে হবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে।
বন্দর ইস্যুতে মতামত
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়ার বিষয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়েও কথা বলেন তিনি। এক প্রশ্নে জবাবে জানান, এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতাদের মতামতের প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমেই হওয়া উচিত।
‘মব ভায়োলেন্স’ বিষয়ে কঠোর বার্তা
‘মব ভায়োলেন্স’ বা সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী এখন আরও কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সংঘবদ্ধ জনতার নামে সহিংসতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
সংস্কার প্রসঙ্গে মন্তব্য
রাষ্ট্র সংস্কার প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, কী ধরনের সংস্কার হচ্ছে কিংবা কিভাবে হচ্ছে—এসব বিষয়ে তিনি অবহিত নন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো আলোচনা বা পরামর্শ করা হয়নি।
ঈদ উদযাপন ও জাতীয় দায়িত্ব
সামনে ঈদুল আজহা উপলক্ষে মানুষ যেন নিরাপদ ও আনন্দমুখর পরিবেশে উৎসব উদযাপন করতে পারে—এ লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন তিনি।
ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত: সেনা প্রধান
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াবে না, যা দেশের জাতীয় স্বার্থ বা সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর সকল সদস্যকে নিরপেক্ষ থাকার নির্দেশ দেন এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের আহ্বান জানান।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করছি এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা করে যাব।
আরও পড়ুন: বাদ পড়ল ২৩ লাখ মৃত ভোটার