হোম সৃষ্টিকর্ম তুমি ফিরে এসো, সীমান্ত!

তুমি ফিরে এসো, সীমান্ত!

শিক্ষাবাণী প্রতিবেদক
তুমি ফিরে এসো, সীমান্ত!

তুমি ফিরে এসো, সীমান্ত!
– এম.এস. কাঁকন

প্রিয় সীমান্ত,
তুমি জানো, আমি এখনো সেই শান্ত দিঘির পাশে এসে বসে থাকি? যেই দিঘিটি ছিলো তোমার সাথে আমার পরিচয়, প্রণয়, পরিণয়ের অন্যতম এক সাক্ষী। তবে মজার বিষয় কি, দিঘিটিও আমাকে একা তার কাছে কামনা করে না। সেও আমার মতোই আকুতি ভরা দৃষ্টিতে তোমায় খুঁজে ফেরে।

ভালোবাসা সীমান্ত,
তুমি তো জানতে, আমি কখনো কারো সাথে বন্ধুত্ব করতাম না বা প্রয়োজন ছিলো না। কারণ, তোমার মাঝে আমি পুরো পৃথিবী খুঁজে পেতাম। কিন্তু এখন আমি এতো এতো মানুষের সাথে মিশেও আমার পৃথিবীকে খুঁজে পাই না। আচ্ছা, তুমিও কি আমাকে একইভাবে খুঁজে খুঁজে পাগলপারা, বলো তো, সত্যি করে?

ওগো সীমান্ত,
তোমার নায়া আর নাবিলের কথা মনে আছে? ওরাই তো আমাকে তোমার করে দিয়েছিলো।
তোমার চলে যাওয়ার পর আমার কি হয়েছিলো, জানি না। তবে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি, আমি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছি। তোমার নায়া আর নাবিল আমার পাশে বসে কাঁদছে। ওদের জিজ্ঞেস করলাম, “কিরে, তোরা কাঁদছিস কেন?” জবাবে বললো, দীর্ঘ একটি বছর তোমার চলে যাওয়ার পর আমি হাসপাতালে কোমায় ছিলাম।

সীমান্ত আমার,
তুমি কি এখনো আগের মতোই একরোখা স্বভাবের আছো?
তুমি কি জানো, তোমার এই স্বভাবের কারণেই আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি? অথচ, তোমাকে বোঝাতে আমি কতো চেষ্টাই না করেছিলাম। কিন্তু পারলাম না গো, তোমায় ভালোবেসে বেঁধে রাখতে!

হে অন্তরতম সীমান্ত,
সীমান্ত, আমি সেই ছায়াবীথি, যাকে পেয়ে তুমি ধন্য হতে পলে পলে। এমনভাবে কেন চাইতে হবে, বলো? এতো ভালোবেসেও কি আমাকে ভালোবাসার বাঁধনে বাঁধতে পেরেছিলে? আমার কাছ থেকে সরে গিয়ে জিতিয়ে দিলে তোমার অযৌক্তিক কিছু চিন্তাকে।

প্রানের সীমান্ত বাবু,
আমি এখন ৮৯ বছর পেরিয়ে তোমার ছায়াবীথি বলছি! আমার চামড়া কুচকে গেছে, হাঁটতে হয় লাঠি ভর করে, খালি চোখে খুব একটা দেখতে পাই না, শরীরটাও ভেঙে গেছে। কিন্তু আমার হৃদয় তোমাকে সেই প্রথম দিনের মতো ব্যকুলো হয়ে আজো খুঁজে বেড়ায়। আমি আজও তোমার প্রতীক্ষায় দিন গুনছি। আমি সেদিনও মানিনি, আজো মানি না, আর কখনো মানতে পারবো না যে, ভালোবাসার কাছে কখনো ইগো জিতে যাবে। তাই তো নরবরে হাতে তোমায় চিঠি লিখে, নৌকো বানিয়ে শান্ত দিঘির জলে ভাসিয়ে দিলাম।

তুমি ফিরে এসো! ফিরে এসো! ফিরে এসো!

You may also like

Leave a Comment