হোম জবস প্রাথমিকে আসছে বড় নিয়োগ

প্রাথমিকে আসছে বড় নিয়োগ

শিক্ষাবাণী প্রতিবেদক
সহকারী শিক্ষক নিয়োগ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে শিগগিরই একটি বৃহৎ পরিসরের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এবারে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের।

সূত্র মতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য বড় পরিসরের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার ৪৩টি পদ শূন্য রয়েছে, যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি, ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতির প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। এই দুটি প্রক্রিয়া একত্রে সম্পন্ন হলে প্রায় ৪০ হাজার নতুন নিয়োগ প্রয়োজন হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ শূন্য থাকা শিক্ষার মানের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। বর্তমানে ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষককে পদোন্নতির বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এই জটিলতা নিরসন এবং নতুন নিয়োগ বিধিমালার বাস্তবায়নের পরেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সম্ভব হবে।”

এদিকে, নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই বিদ্যমান নিয়োগ বিধিমালায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে মন্ত্রণালয়। একজন কর্মকর্তা জানান, “নতুন বিধিমালায় নারী ও পোষ্য কোটার প্রস্তাবিত বিলুপ্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংশোধিত বিধিমালা বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত নীতিমালা জারি করা হবে।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা ব্যবস্থায় পদোন্নতি সংক্রান্ত দীর্ঘস্থায়ী জটিলতার ইতিহাস রয়েছে। ২০০৯ সালে একটি মামলার কারণে দেশব্যাপী প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে পদোন্নতি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৪ সালে মামলাটি নিষ্পত্তি হলেও ওই বছরই প্রধান শিক্ষক পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় তা চলে যায় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে। ফলে ফের বন্ধ হয়ে যায় পদোন্নতির প্রক্রিয়া এবং ২০১৭ সালের ২৩ মে থেকে সহকারী শিক্ষকদের ‘চলতি দায়িত্বে’ প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া শুরু হয়।

বহু প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট লক্ষ্মীপুর জেলার তিন উপজেলার সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পান, যা পদোন্নতি কার্যক্রমের সূচনা হিসেবে বিবেচিত হয়। পরে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ১৯ উপজেলায় ৯৪১ জন সহকারী শিক্ষককে পদোন্নতি দেওয়া হয়। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরিকাল গণনা সংক্রান্ত একটি মামলার কারণে আবারো পদোন্নতি কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।

সাম্প্রতিক এসব জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়োগ কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করছে, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট দূর করা যায়।

You may also like

Leave a Comment